8. শব্দ ও পদ
৪.১ লিঙ্গান্তরের নিয়ম ও উদাহরণ
৪.২ বহুবচন গঠনের নিয়ম ও উদাহরণ
8.0 বিশেষ্যের শ্রেণিবিভাগ : সংজ্ঞাবাচক, শ্রেণিবাচক, সমষ্টিবাচক, ভাববাচক ও ক্রিয়াবাচক
৪.৪ নির্দেশক সর্বনামের রূপ (চলিত রীতি) : ‘এ’, ‘ও’
8.0 ধাতু ও ক্রিয়াপদ
৪.৬ সকর্মক ও অকর্মক ক্রিয়া
৪.৭ মৌলিক ও সাধিত ধাতু
৪.৮ ক্রিয়ার কাল : বর্তমান, অতীত, ভবিষ্যৎ ও অনুজ্ঞা
৪.১ কৰ্ম-অনুশীলন
অর্থ হলো শব্দের প্রাণ। এক বা একাধিক ধ্বনির সম্মিলনে যদি কোনো নির্দিষ্ট অর্থ প্রকাশ পায় তবে তাকে শব্দ বলে। যেমন : ক, ল, ম এই তিনটি ধ্বনি একসাথে জুড়ে দিলে হয় : কলম (ক+ল+ম)। ‘কলম' লেখার - একটি উপকরণকে বোঝায়। সুতরাং এটি একটি শব্দ। এ রকম : আমি, বাজার, যাই ইত্যাদিও শব্দ। এগুলোর আলাদা আলাদা অর্থ আছে। কিন্তু এ রকম আলাদা আলাদা শব্দ মনের ভাব সম্পূর্ণ প্রকাশ করতে পারে না। তাই অর্থপূর্ণ শব্দ জুড়ে জুড়ে মানুষ তার মনের ভাব সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করে থাকে। যেমন : ‘আমি বাজারে যাই। ’- এটি একটি বাক্য। এখানে বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণ প্রকাশ পেয়েছে। কতগুলো অর্থপূর্ণ শব্দ যখন একত্রিত হয়ে বক্তার মনের ভাব সম্পূর্ণ প্রকাশ করে, তখন তাকে বাক্য বলে।
এবার লক্ষ করি : আমি, বাজার, যাই – তিনটি অর্থপূর্ণ শব্দ।
আমি বাজারে যাই – একটি মনের ভাব প্রকাশক বাক্য।
এখানে ‘বাজার' শব্দটি বাক্যে ব্যবহৃত হওয়ার সময় কিছুটা (বাজার+এ) বদলে গেছে। বাক্যে ব্যবহৃত হওয়ার সময় শব্দের শেষে এই ধরনের কিছু বর্ণ যোগ হয়। এগুলোকে বলে বিভক্তি। শব্দে বিভক্তি যুক্ত হলেই তাকে পদ বলা হয়। তাহলে বলা যায় বিভক্তি যুক্ত শব্দকে অথবা বাক্যে ব্যবহৃত প্রতিটি শব্দকে পদ বলে। পদ পাঁচ প্রকার : ১. বিশেষ্য ২. বিশেষণ ৩. সর্বনাম ৪. অব্যয় ও ৫. ক্রিয়া।
লিঙ্গ শব্দের অর্থ চিহ্ন বা লক্ষণ। বাংলা ভাষায় এমন অনেক শব্দ আছে যেগুলো কোনোটি পুরুষ জাতীয়, কোনোটি ত্রী জাতীয়, কোনোটি আবার স্ত্রী-পুরুষ উভয়কেই বোঝায়। তাই যেসব চিহ্ন বা লক্ষণ দ্বারা শব্দকে পুরুষ, ত্রী বা অন্য জাতীয় হিসেবে আলাদা করা যায়, তাকে লিঙ্গ বলে।
লিঙ্গ চার প্রকার। যথা :
১. পুংলিঙ্গ বা পুরুষবাচক শব্দ। যেমন : বাবা, ছেলে, বিদ্বান, সুন্দর।
২. স্ত্রীলিঙ্গ বা স্ত্রীবাচক শব্দ। যেমন : মা, মেয়ে, বিদুষী, সুন্দরী। ৩. উভয়লিঙ্গবাচক শব্দ। যেমন : মানুষ, শিশু, সন্তান, বাঙালি ৷
৪. ক্লীবলিঙ্গ বা অলিঙ্গবাচক শব্দ। যেমন : বই, খাতা, চেয়ার, টেবিল৷
পুংলিঙ্গ বা পুরুষবাচক শব্দকে স্ত্রীলিঙ্গ বা স্ত্রীবাচক শব্দে রূপান্তর করাকে লিঙ্গান্তর বা লিঙ্গ পরিবর্তন বলে লিঙ্গ পরিবর্তনের কিছু সাধারণ নিয়ম আছে। যেমন :
১. পুরুষবাচক শব্দের শেষে –আ (1), —ঈ (ী), -নী, –আনি, –ইনি ইত্যাদি স্ত্রীপ্রত্যয় জুড়ে পুংলিঙ্গ শব্দকে ত্রীলিঙ্গে রূপান্তর করা যায়। যেমন : প্রথম > প্রথমা, চাকর > চাকরানি, ছাত্র > ছাত্রী, জেলে > জেলেনি।
২. কখনো কখনো ভিন্ন শব্দযোগেও পুংলিঙ্গ শব্দ স্ত্রীলিঙ্গবাচক শব্দে পরিবর্তন হয়। যেমন : বাবা > মা, ছেলে > মেয়ে, পুরুষ> নারী, সাহেব > বিবি, স্বামী > স্ত্রী, কর্তা > গিন্নি, ভাই > বোন, পুত্র ≥ কন্যা, বর > কনে।
৩. শব্দের আগে পুরুষবাচক বা স্ত্রীবাচক শব্দ জুড়ে দিয়েও শব্দের লিঙ্গান্তর হয়ে থাকে। যেমন : পুরুষ-মানুষ > মেয়ে-মানুষ, হুলো বিড়াল > মেনি বিড়াল, মদ্দা ঘোড়া > মাদি ঘোড়া, ব্যাটাছেলে > মেয়েছেলে, এঁড়ে বাছুর বকনা বাছুর, বলদ গরু > গাই গরু।
৪. কতকগুলো পুরুষবাচক শব্দের আগে মহিলা, নারী ইত্যাদি স্ত্রীবাচক শব্দ প্রয়োগ করে শব্দের লিঙ্গান্তর হয়। যেমন : কবি > মহিলা কবি, ডাক্তার > মহিলা ডাক্তার, সভ্য > নারী সভ্য, সৈন্য > নারী সৈন্য।
৫. কোনো কোনো শব্দের শেষে পুরুষ ও স্ত্রীবাচক শব্দ যোগ করে পুংলিঙ্গবাচক শব্দ স্ত্রীলিঙ্গবাচক শব্দে পরিবর্তন হয়। যেমন : গয়লা > গয়লা বউ, বোন পো > বোন ঝি, ঠাকুর পো > ঠাকুর ঝি।
৬. কতকগুলো শব্দে কেবল পুরুষ বোঝায়। যেমন : কবিরাজ, কৃতদার, অকৃতদার, বিপত্নীক, ত্রৈণ।
৭. কতকগুলো শব্দ শুধু ত্রীবাচক হয়। যেমন : সতীন, সত্মা, সধবা, এয়ো, দাই।
নিচে পুংলিঙ্গ শব্দকে স্ত্রীলিঙ্গে পরিবর্তনের কিছু নিয়ম ও উদাহরণ দেওয়া হলো :
১. শব্দের শেষে ‘–আ' প্রত্যয় যোগ করে :
পুংলিঙ্গ | স্ত্রীলিঙ্গ | পুংলিঙ্গ | স্ত্রীলিঙ্গ |
---|---|---|---|
অজ | অজা | প্ৰিয় | প্ৰিয়া |
আধুনিক | আধুনিকা | প্রবীণ | প্ৰবীণা |
কোকিল | কোকিলা | বৃদ্ধ | বৃদ্ধা |
চতুর | চতুরা | মাননীয় | মাননীয়া |
চঞ্চল | চঞ্চলা | শিষ্য | শিষ্যা |
নবীন | নবীনা | সরল | সরলা |
২. শব্দের শেষে 'আ'-এর জায়গায় ‘–ই' প্রত্যয় বসিয়ে :
পুংলিঙ্গ | স্ত্রীলিঙ্গ | পুংলিঙ্গ | স্ত্রীলিঙ্গ |
---|---|---|---|
কাকা | কাকি | বুড়া | বুড়ি |
চাচা | চাচি | নানা | নানি |
দাদা | দাদি | মামা | মামি |
৩. শব্দের শেষে ‘—ঈ' প্রত্যয় যোগ করে :
পুংলিঙ্গ | স্ত্রীলিঙ্গ | পুংলিঙ্গ | স্ত্রীলিঙ্গ |
---|---|---|---|
কিশোর | কিশোরী | মানব | মানবী |
ছাত্র | ছাত্রী | ময়ূর | ময়ূরী |
তরুণ | তরুণী | রাক্ষস | রাক্ষসী |
দাস | দাসী | সিংহ | সিংহী |
নর | নারী | সুন্দর | সুন্দরী |
পাত্র | পাত্রী | হরিণ | হরিণী |
৪. শব্দের শেষে ‘—নি / - নী' প্রত্যয় যোগ করে :
পুংলিঙ্গ | স্ত্রীলিঙ্গ | পুংলিঙ্গ | স্ত্রীলিঙ্গ |
---|---|---|---|
কামার | কামারনী | জেলে | জেলেনি |
কুমার | কুমারনী | ধোপা | ধোপানি |
৫. শব্দের শেষে ‘–আনি' / ‘আনী' প্রত্যয় যোগ করে :
পুংলিঙ্গ | স্ত্রীলিঙ্গ | পুংলিঙ্গ | স্ত্রীলিঙ্গ |
---|---|---|---|
চাকর | চাকরানি | মেথর | মেথরানি |
ঠাকুর | ঠাকুরানি | ঠাকুরানি | নাপিতানি |
অরণ্য | অরণ্যানী | হিম | হিমানী |
ইন্দ্ৰ | ইন্দ্ৰানী | শূদ্র | শুদ্রানী |
৬. শব্দের শেষে ‘ইনী' প্রত্যয় যোগ করে :
পুংলিঙ্গ | স্ত্রীলিঙ্গ | পুংলিঙ্গ | স্ত্রীলিঙ্গ |
---|---|---|---|
কাঙাল | কাঙালিনী | গোয়ালা | গোয়ালিনী |
অনাথ | অনাথিনী | বাঘ | বাঘিনী |
নাগ | নাগিনী | বিদেশি | বিদেশিনী |
মানী | মানিনী | গুণী | গুণিনই |
তপস্বী | তপস্বিনী | ধনী | ধনিনী |
শ্বেতাঙ্গ | শ্বেতাঙ্গিনী | সুকেশ | সুকেশিনী |
৭. শব্দের শেষে ‘—ইকা' প্রত্যয় যোগ করে :
পুংলিঙ্গ | স্ত্রীলিঙ্গ | পুংলিঙ্গ | স্ত্রীলিঙ্গ |
---|---|---|---|
বালক | বালিকা | পাঠক | পাঠিকা |
লেখক | লেখিকা | অধ্যাপক | অধ্যাপিকা |
গায়ক | গায়িকা | নায়ক | নায়িকা |
সেবক | সেবিকা | শিক্ষক | শিক্ষিকা |
৮. পুরুষবাচক শব্দের শেষে 'তা' থাকলে ‘ত্রী' হয় :
পুংলিঙ্গ | স্ত্রীলিঙ্গ | পুংলিঙ্গ | স্ত্রীলিঙ্গ |
---|---|---|---|
নেতা | নেত্রী | কর্তা | কর্ত্রী |
শ্রোতা | শ্রোত্রী | ধাতা | ধাত্রী |
৯. পুরুষবাচক শব্দের শেষে ‘অত’, ‘বান’, ‘মান’, ‘ঈয়ান' থাকলে ‘অতী’, ‘বতী', ‘মতী', ‘ঈয়সী' হয় :
পুংলিঙ্গ | স্ত্রীলিঙ্গ | পুংলিঙ্গ | স্ত্রীলিঙ্গ |
---|---|---|---|
সৎ | সতী | মহৎ | মহতী |
গুণবান | গুণবতী | রূপবান | রূপবতী |
শ্ৰীমান | শ্ৰীমতী | বুদ্ধিমান | বুদ্ধিমতী |
গরীয়ান | গরীয়সী | মহীয়ান | মহীয়সী |
ব্যাকরণে বচন অর্থ সংখ্যার ধারণা। তাই, যে শব্দ দিয়ে ব্যাকরণে কোনো কিছুর সংখ্যার ধারণা প্রকাশ করা হয়, তাকে বচন বলে।
বাংলা ভাষায় বচন দু প্রকার । যথা : ১. একবচন ও ২. বহুবচন।
১. একবচন : যে শব্দ দিয়ে কোনো বস্তু, প্রাণী বা ব্যক্তির একটিমাত্র সংখ্যার ধারণা হয়, তাকে একবচন বলে। যেমন :
পাখাটি খুঁজে পাচ্ছি না।
গামছাখানা কোথায় রাখলে?
কাজল কি বাড়ি ফিরেছে?
শিক্ষক বললেন, “দুই আর দুই চার হয়।”
একবচন প্রকাশের উপায়
বাংলা ভাষায় একবচন প্রকাশের কিছু উপায় আছে। যেমন :
ক. শব্দের মূল রূপের সাথে কিছু যোগ না করে :
‘আমার বাড়ি যাইও ভ্রমর, বসতে দেব পিঁড়ে। '
আজ স্কুল ছুটি।
রীতা গান শিখতে গেছে।
বাস ঢাকা ছেড়েছে।
খ. শব্দের শেষে টি, টা, খান, খানা, খানি, গাছ, গাছা, গাছি ইত্যাদি নির্দেশক যোগ করে :
মেয়েটি খুব চালাক৷
তোমার কলমটা দাও তো।
নৌকাখানি বেশ সুন্দর হয়েছে।
বইখানা আমি পড়েছি।
দড়িগাছা দিয়ে যা তো মা।
দাদুর হাতে লাঠিগাছা বেশ মানিয়েছে।
গ. শব্দের আগে এক, একটা, একটি, একখানা, একজন ইত্যাদি সংখ্যাবাচক শব্দ বসিয়ে :
এক দেশে ছিল এক রাজা।
তোমার সাথে একটা কথা ছিল।
একটি কলম নিয়ে দুভাইয়ের মধ্যে টানাটানি শুরু হয়েছে।
একখানা ইংরেজি খবরের কাগজ এনো তো।
একজন ছাত্র এসেছিল তোমার কাছে।
২. বহুবচন : যে শব্দ দিয়ে একের অধিক সংখ্যক বস্তু, ব্যক্তি বা প্রাণীর ধারণা পাওয়া যায়, তাকে বহুবচন বলে। যেমন :
আমরা সেখানে গিয়েছিলাম।
ছেলেরা মাঠে খেলছে।
‘শিশুগণ দেয় মন নিজ নিজ পাঠে। '
‘রাখাল গরুর পাল লয়ে যায় মাঠে। '
বহুবচন গঠনের নিয়ম ও উদাহরণ
বাংলা ভাষায় বহুবচন গঠনের নানা উপায় আছে। প্রাণিবাচক ও অপ্রাণিবাচক এবং উন্নত প্রাণিবাচক ও ইতর প্রাণিবাচক শব্দভেদে বিভিন্ন ধরনের বহুবচনবোধক বিভক্তি, প্রত্যয় ও সমষ্টিবাচক শব্দযোগে বহুবচন গঠন করা হয়ে থাকে। যেমন :
১. শব্দের শেষে রা, এরা, গুলো, গুলি, দের বিভক্তি যোগ করে :
রা – ছেলেরা বল খেলছে।
তারা আজ আর আসবে না।
এরা – “ভাইয়েরা আমার, ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব'।”
শ্রমিকেরা ধর্মঘট ডেকেছে।
গুলো – আমগুলো রাজশাহী থেকে এসেছে।
ছেলেগুলো খুব হৈচৈ করছে।
গুলি – বইগুলি জায়গা মতো তুলে রাখ।
দের – মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা শ্রদ্ধা করি।
২. শব্দের শেষে গণ, বৃন্দ, বর্গ, কুল, মণ্ডলী, মালা, গুচ্ছ, পাল, দল, দাম, ঝাঁক, আবলি, সব, সমূহ, রাজি, রাশি, পুঞ্জ, শ্রেণি ইত্যাদি সমষ্টিবাচক শব্দ যোগ করে :
গণ – ‘শিশুগণ দেয় মন নিজ নিজ পাঠে।’
বৃন্দ – ভক্তবৃন্দ কবিকে শুভেচ্ছা জানালেন।
কুল – সন্ধ্যায় পক্ষিকুল নীড়ে ফিরে এসেছে।
মণ্ডলী – শিক্ষকমণ্ডলী নবীন ছাত্রদের বরণ করে নিলেন।
গুচ্ছ – আমি রবীন্দ্রনাথের ‘গল্পগুচ্ছ' পড়েছি।
পাল – ‘রাখাল গরুর পাল লয়ে যায় মাঠে।’
দল – জাতীয় ক্রিকেটদলে তার জায়গা হয়েছে।
দাম – শৈবালদামে পুকুর ভরেছে।
ঝাঁক – পায়রার ঝাঁক বাকুম বাকুম করছে।
আবলি – আজ রাতে পদাবলি কীর্তন শুনতে যাব ।
সব – ‘পাখিসব করে রব রাতি পোহাইল।'
সমূহ – অতিরিক্ত বৃক্ষনিধনের ফলে বনসমূহ উজাড় হয়ে যাচ্ছে।
রাজি – লাইব্রেরির গ্রন্থরাজির মধ্যে রয়েছে সমৃদ্ধ জ্ঞানের ভাণ্ডার।
রাশি – বাজারে নিয়ে যাবার জন্য পুষ্পরাশি চয়ন করা হয়েছে।
পুঞ্জ – মেঘপুঞ্জের অবস্থান দেখে মনে হচ্ছে বৃষ্টি হবে।
শ্রেণি – ধনিকশ্রেণি সব সময় নিম্নশ্রেণির উপর খবরদারি করে থাকে।
৩. শব্দের আগে অনেক, অজস্র, অসংখ্য, প্রচুর, বহু, বিস্তর, নানা, ঢের, সব, সকল, সমস্ত, হরেক ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে :
অনেক – এবার পরীক্ষায় অনেক ছাত্র ফেল করেছে।
অজস্র – তার অজস্র টাকা-পয়সা হয়েছে।
অসংখ্য – বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ এখনো অশিক্ষিত।
প্রচুর – বাজারে প্রচুর আম উঠেছে।
বহু – তিনি বহু সম্পত্তির মালিক।
বিস্তর – ‘সে কহে বিস্তর মিছা, যে কহে বিস্তর। ’
নানা – ‘নানা মুনির নানা মত। ’
ঢের - - বৃষ্টি আসতে এখনো ঢের বাকি।
সব – বাজারে গিয়ে সব টাকা খরচ হয়ে গেল।
সকল – পৃথিবীর সকল মানুষ আমার ভাই।
সমস্ত তার বলা সমস্ত কাহিনিই ছিল বানোয়াট।
হরেক – মেলায় হরেক রকম জিনিস পাওয়া যায়।
৪. একই শব্দ পর পর দুবার বসিয়ে :
ফুলে – বাগানটা ফুলে ফুলে ভরে গেছে।
হাঁড়ি – বরযাত্রীরা হাঁড়ি হাঁড়ি সন্দেশ নিয়ে এসেছে।
কাঁড়ি – মেয়ের বিয়েতে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচা হয়ে গেল।
বলে – তোমাকে বলে বলে আর পারলাম না।
খেটে – আমি খেটে খেটে সারা হলাম।
দ্বারে · দ্বারে দ্বারে ঘুরেও আজ ভিক্ষা জুটল না।
ছোট – ‘আমাদের ছোট গাঁয়ে ছোট ছোট ঘর। '
বড় – বাবা বড় বড় আম কিনে এনেছেন।
ঘরে – আজ ঘরে ঘরে বিজয়ের আনন্দ।
বিন্দু – বিন্দু বিন্দু জল দিয়ে তৈরি হয় বিশাল সাগর।
ভালো – ক্লাসের ভালো ভালো ছেলেকে পুরস্কার দেওয়া হবে।
যে- যে যে যাবে, তারা লঞ্চে ওঠো।
৫. আগে সংখ্যাবাচক শব্দ বসিয়ে :
কাঞ্চনের বিয়েতে শ পাঁচেক অতিথি খাবে।
সপ্তাহ দুই পরে মাছের দাম কমে যাবে।
শিয়াল তার সাত ছেলেকে কুমিরের কাছে পড়তে দিল।
দশ কেজি রসগোল্লা দিন তো।
৬. কখনো কখনো একবচনের রূপ দিয়ে :
মানুষ মরণশীল।
বাঙালি সব পারে।
বাগানে ফুল ফুটেছে।
বাজারে লোক জমেছে।
পোকার আক্রমণে ফসল নষ্ট হয়।
বনে বাঘ থাকে।
গরু আমাদের দুধ দেয়।
বচন মূলত বিশেষ্য ও সর্বনাম পদের এক বা একাধিক সংখ্যার ধারণা নির্দেশ করে। সে-কারণে শুধু বিশেষ্য ও সর্বনাম পদের বচনভেদ হয়৷
উন্নত প্রাণিবাচক শব্দের বহুবচনে গণ, বৃন্দ, মণ্ডলী, বর্গ এবং অপ্রাণিবাচক শব্দের বহুবচনে আবলি, গুচ্ছ, দাম, নিকর, পুঞ্জ, মালা, রাজি, রাশি ব্যবহৃত হয়।
রা, এরা, গণ, গুলো, কুল, সকল, সব, সমূহ প্রাণিবাচক ও অপ্রাণিবাচক উভয় শব্দের বহুবচনে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
বাংলা বাক্যে একই সঙ্গে একাধিক বহুবচনবাচক শব্দ ব্যবহৃত হয় না। যেমন :
সকল ছাত্রদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। (ভুল)
সকল ছাত্রকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। (শুদ্ধ)
ছাত্রদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। (শুদ্ধ)
আগেই বলা হয়েছে : পদ পাঁচ প্রকার : বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, অব্যয় ও ক্রিয়া।
বিশেষ্যপদ
বাক্যে ব্যবহৃত যে পদ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, বস্তু, সমষ্টি, স্থান, কাল, ভাব, কাজ বা গুণের নাম বোঝায়, তাকে বিশেষ্যপদ বলে। এক কথায়, কোনো কিছুর নামকে বিশেষ্যপদ বলে। যেমন : নজরুল, মানুষ, বই, খাতা, লেখাপড়া, পশু, সভা, সমিতি, ঢাকা, খুলনা, শয়ন, ভোজন ইত্যাদি।
বিশেষ্যপদের নানা শ্রেণিবিভাগ রয়েছে। যেমন :
১. সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য : যে বিশেষ্যপদ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, প্রাণী, স্থান, নদী, সমুদ্র, পর্বত, গ্রন্থ ইত্যাদির নির্দিষ্ট নাম বোঝায়, তাকে সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য বলে। একে নামবাচক বিশেষ্যও বলা হয়। যেমন :
ব্যক্তির নাম : আলাওল, বঙ্কিম, নজরুল, সুকান্ত, রোকেয়া, সমীরণ বড়ুয়া, রবার্ট, মিল্টন, হ্যারি।
প্রাণীর নাম : গরু, ছাগল, ভেড়া, সিংহ, বাঘ, হাঁস, মুরগি, ময়না, টিয়া, শালিক, হিপপোটেমাস
স্থানের নাম : খুলনা, ঢাকা, চট্টগ্রাম, শ্রীপুর, শেরপুর, গোপালগঞ্জ, দিল্লি, মস্কো, লন্ডন,প্যারিস।
নদ-নদীর নাম : ব্রহ্মপুত্র, বুড়িগঙ্গা, পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, নীলনদ, আমাজান, হোয়াংহো।
সমুদ্রের নাম : বঙ্গোপসাগর, ভারত মহাসাগর, প্রশান্ত মহাসাগর, আরব সাগর।
পাহাড়-পর্বতের নাম : গারো পাহাড়, হিমালয়, লালমাই, কেওক্রাডাং, হিন্দুকুশ, ককেশাস, আন্দিজ।
গ্রন্থের নাম : গীতাঞ্জলি, অগ্নিবীণা, হিমু অমনিবাস, বেড়াল মানবী, বাঁধ ভেঙে দাও৷
বাক্যে প্রয়োগ
কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের জাতীয় কবি।
সুন্দরবন খুলনা বিভাগে অবস্থিত।
আমাদের বাড়ি ধলেশ্বরী নদীর পাড়ে।
আমি ‘অগ্নিবীণা’ পড়েছি।
গরু গৃহপালিত পশু।
আমি হিমালয় দেখি নি।
লন্ডনে নজিবের মামা থাকেন।
দুবলারচর বঙ্গোপসাগরের একটি চর।
২. শ্রেণিবাচক বিশেষ্য : যে বিশেষ্যপদ দ্বারা ব্যক্তি, প্রাণী, স্থান, নদী, পর্বত ইত্যাদির সাধারণ নাম বোঝায়, তাকে শ্রেণিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন : মানুষ, পাখি, পর্বত, কবি, শহর, বই, গাছ, বাঙালি, মাছ, সাগর ইত্যাদি।
সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্যের সাথে শ্রেণিবাচক বিশেষ্যের আপাত মিল লক্ষ করা গেলেও বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে।
সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্যের দ্বারা সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি, বস্তু, প্রাণী বা স্থানের নাম বোঝায়।
কিন্তু শ্রেণিবাচক বিশেষ্যপদ এসবের সাধারণ বা অনির্দিষ্ট নাম প্রকাশ করে। যেমন :
সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য (নির্দিষ্ট) | শ্রেণিবাচক বিশেষ্য (অনির্দিষ্ট) |
---|---|
১. রবীন্দ্রনাথ বিশ্বকবি। | ১. কবি চিরকাল বরণীয়। |
২ . মানুষটি ক্ষুধায় কাতর | ২. মানুষ মরণশীল। |
৩. পোড়াবাড়ির চমচম খুব ভালো মিষ্টি। | ৩. মিষ্টি সবাই পছন্দ করে না। |
৪. আমি ইলিশ মাছ খেতে ভালোবাসি। | ৪. সবাই মাছ খেতে ভালোবাসে। |
৫. আমরা ঢাকা শহরে থাকি। | ৫. আমরা শহরে থাকি। |
৬. আমি ‘অগ্নিবীণা’ পড়ছি। | ৬. আমি বই পড়ছি। |
৭. হিমালয় বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত। | ৭. পর্বতে ওঠা খুব বিপজ্জনক। |
৮. ময়না পাখি কথা বলে। | ৮. পাখি আকাশে ওড়ে। |
৯. পদ্মা বাংলাদেশের বড় নদী। | ৯. নদী সাগরে গিয়ে মেশে৷ |
১০. সুন্দরীগাছ সুন্দরবনে পওয়া যায়৷ | ১০. গাছ আমাদের প্রাণ বাঁচায়। |
৩. সমষ্টিবাচক বিশেষ্য : যে বিশেষ্যপদ দ্বারা একজাতীয় ব্যক্তি, বস্তু বা প্রাণীর সমষ্টি বোঝায়, তাকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন : জনতা, সভা, সমিতি, শ্রেণি, দল, সংঘ, পাল, ঝাঁক, গুচ্ছ, মালা, সারি ইত্যাদি৷
বাক্যে প্রয়োগ
জনতাই পারে দেশকে এগিয়ে নিতে।
সভা নয়টায় শুরু হয়েছে।
এখানে একটা বহুমুখী সমবায় সমিতি গড়ে উঠেছে।
বিশেষ্যপদের নানা শ্রেণিবিভাগ রয়েছে।
দল বদল করে আর কতদিন চলবে?
একপাল হরিণ আমাদের সামনে দিয়ে চলে গেল।
ইংরেজদের নৌবহর বিশ্বখ্যাত।
আমি সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজ দেখেছি।
৪. ভাববাচক বিশেষ্য : যে বিশেষ্যপদ দ্বারা ক্রিয়ার ভাব বা কাজের নাম বোঝায়, তাকে ভাববাচক বা ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন : ভোজন, শয়ন, দর্শন, গমন, শ্রবণ, করা, দেখা, শোনা ইত্যাদি।
ভাববাচক বিশেষ্য ও ক্রিয়াপদ এক নয়। যেমন :
ভাববাচক বিশেষ্য | ক্রিয়াপদ |
---|---|
১. কোটবাড়ি দর্শন করে এলাম। | ১. আমি কোটবাড়ি দেখেছি। |
২. মহারাজের ভোজন-পর্ব শেষ হয়েছে। | ২. আমরা খেয়েছি। |
৩. বাবার শয়ন এখনো সম্পন্ন হয় নি। | ৩. বাবা শুয়েছেন ৷ |
৪. খুকুর নাচন দেখে যা। | ৪. খুকু নাচছে। |
৫. তার বোধহয় ফেরা হবে না। | ৫. সে ফিরেছে। |
যে পদ দ্বারা কোনো কিছু করা বা কোনো কাজ করা বোঝায়, তাকে ক্রিয়াপদ বলে। যেমন
বাবা এসেছেন।
ঘড়িতে দশটা বাজে।
আমি অঙ্ক করছি।
ক্রিয়াপদ নানা রকম হয় :
১. সমাপিকা ক্রিয়া : যে ক্রিয়া দ্বারা বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ প্রকাশিত হয়, তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে। যেমন :
সেতু স্কুলে যায়।
বিথু গান গায়৷
২. অসমাপিকা ক্রিয়া : যে ক্রিয়া দ্বারা বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ হয় না, তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে। যেমন :
আমি বাড়ি গিয়ে…..
সে বই নিয়ে…..
এখানে ‘গিয়ে’, ‘নিয়ে' ক্রিয়ার দ্বারা কথা শেষ হয় নি। বাক্যের অর্থ অসম্পূর্ণ রয়েছে। বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ করার জন্য আরও ক্রিয়া চাই। যেমন :
আমি বাড়ি গিয়ে খাব।
সে বই নিয়ে পড়তে বসেছে।
সুতরাং, ‘গিয়ে’, ‘নিয়ে' হচ্ছে অসমাপিকা ক্রিয়া। আর ‘খাব’, ‘বসেছে' এগুলো সমাপিকা ক্রিয়া৷
৩. সকর্মক ক্রিয়া : যে ক্রিয়ার কোনো কর্ম থাকে, তাকে সকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন :
স্বপন চিঠি লিখছে।
কাঞ্চন বই পড়ছে।
৪. অকর্মক ক্রিয়া : যে ক্রিয়ার কোনো কর্ম থাকে না, তাকে অকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন :
স্বপন লিখছে।
কাঞ্চন পড়ছে।
৫. দ্বিকর্মক ক্রিয়া : যে ক্রিয়ার দুটি কর্ম থাকে তাকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন :
শিক্ষক ছাত্রদের বাংলা পড়াচ্ছেন।
মা শিশুকে দুধ খাওয়াচ্ছেন।
৬. প্রযোজক ক্রিয়া : যে ক্রিয়া অন্যের দ্বারা চালিত হয়, তাকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে। যেমন :
মা খোকাকে চাঁদ দেখাচ্ছেন।
সাপুড়ে সাপ খেলায়।
৭. যৌগিক ক্রিয়া : একটি সমাপিকা ক্রিয়া ও একটি অসমাপিকা ক্রিয়া মিলিত হয়ে যে ক্রিয়াপদ গঠিত হয়, তাকে যৌগিক ক্রিয়া বলে। যেমন :
সে পাস করে গেল৷
সাইরেন বেজে উঠল।
বাক্যে বিশেষ্যপদের পরিবর্তে যে পদ ব্যবহৃত হয়, তাকে সর্বনাম পদ বলে। যেমন :
বিশেষ্য : বকুল ভালো ছেলে।
সর্বনাম : সে প্রতিদিন স্কুলে যায়।
তার স্বাস্থ্য ভালো।
তাকে সবাই ভালোবাসে।
এখানে বিশেষ্য ‘বকুল’-এর পরিবর্তে ‘সে’, ‘তার’, ‘তাকে’ প্রভৃতি পদ ব্যবহার করায় বাক্যগুলো শ্রুতিমধুর হয়েছে।
বাংলা ভাষায় সর্বনাম পদ নানারকম হয়। যেমন :
১.ব্যক্তিবাচক সর্বনাম : আমি, আমরা, তুমি, তোমরা, সে, তারা, তিনি, এরা, ওরা ইত্যাদি।
২. নির্দেশক সর্বনাম : এ, এটি, সেটি, সেগুলো ইত্যাদি।
৩. সাকল্যবাচক সর্বনাম : সকল, সব, সমুদয় ইত্যাদি।
৪. সাপেক্ষ সর্বনাম : যে-সে, যা-তা, যিনি-তিনি ইত্যাদি।
৫. প্রশ্নসূচক সর্বনাম : কী, কার, কাদের, কিসে ইত্যাদি।
৬. অনির্দেশক সর্বনাম : কেউ, কোন, কেহ, কিছু ইত্যাদি।
৭. আত্মবাচক সর্বনাম: স্বয়ং, নিজ, খোদ, আপনি ইত্যাদি।
৮. অন্যাদিবাচক সর্বনাম : অন্য, অপর, পর ইত্যাদি।
যে সর্বনাম পদ সাধারণত বিশেষ্যকে নির্দিষ্ট করে দেয়, তাকে নির্দেশক সর্বনাম পদ বলে। যেমন :
এ, এই, এরা, ইহারা, ইহা, এঁরা, ইহাদের, এঁদের, ও, ওরা, ওদের, ওঁদের, ঐ, উনি, উহা, উহাদের ইত্যাদি।
বিশেষ্যপদের সাথে যেমন বিভক্তি যোগ হয়ে শব্দ গঠন করে, তেমনি বিভক্তি, প্রত্যয় ও কর্মপ্রবচনীয় যুক্ত হয়ে সর্বনামের রূপ হয়।
নিচে নির্দেশক সর্বনাম 'এ' এবং 'ও'-এর চলিত রূপ দেখানো হলো।
এ-এর রূপ
১. প্রাণিবাচক রূপ : একবচন বহুবচন
এ, এর, ইনি, এঁর এরা, এদের, এঁরা, এঁদের
বাক্যে প্রয়োগ : এ আমার ভাই; এর নাম উজ্জ্বল।
ইনি আমার চাচা; এঁরা করাচি থাকেন। এঁদের লোহালক্কড়ের বড় ব্যবসা আছে।
২. অপ্রাণিবাচক রূপ : একবচন বহুবচন
এটা, এটি, এখানা এসব, এগুলো, এসমস্ত
বাক্যে প্রয়োগ : এটা এখান থেকে সরাও ৷
এটি আপনার বই।
এগুলো টেবিলে রাখ।
এসবের জন্য তুমি দায়ী।
এসমস্ত কথা আমাকে কেন শোনাচ্ছেন?
১. প্রাণিবাচক রূপ : একবচন বহুবচন
ও, ওর, ওঁ, উনি, ওদের, ওকে ওরা, ওদের, ওঁরা, ওঁদের, ওদেরকে
বাক্যে প্রয়োগ : ও যেন ফিরে আসে।
উনি সম্পর্কে আমার মামা হন। ওঁদের বাড়ি ময়মনসিংহ।
ওকে এখন ডাকার দরকার নেই।
ওদের যেতে বল।
২. অপ্রাণিবাচক রূপ : একবচন বহুবচন
ওই, ওটি, ওখানা ওসব, ওগুলো, ওসমস্ত
বাক্যে প্রয়োগ : তবে ওই কথাই রইল।
ওটি কিসের বই?
ওখানা আবার কবে কিনলে?
ওসব কথা ছাড়ো তো।
তোমার ওগুলো কাল দেখে দেব।
ওসমস্ত গুলবাজি এবার বন্ধ কর।
সকর্মক ক্রিয়া : যে ক্রিয়া পদের কর্ম থাকে তাকে সকর্মক ক্রিয়া বলে।
বাক্যের ক্রিয়াকে কী বা কাকে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায়, তাই কর্মপদ। কর্মযুক্ত ক্রিয়াই সকর্মক
ক্রিয়া। যেমন :
মা ভাত রান্না করছেন।
এ বাক্যে ক্রিয়াপদ হচ্ছে ‘রান্না করছেন'।
প্রশ্ন : কী রান্না করছেন?
উত্তর : ভাত।
অতএব ‘রান্না করছেন' ক্রিয়া পদটির কর্ম হচ্ছে ‘ভাত’। ‘রান্না করছেন' সকর্মক ক্রিয়া।
অকর্মক ক্রিয়া : যে ক্রিয়ার কর্ম নেই, তাকে অকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন : সৌরভ পড়ে।
সৌরভ কী পড়ে? – এ প্রশ্নের উত্তর নেই। অর্থাৎ এ বাক্যে ‘পড়ে’ ক্রিয়াপদের কোনো কর্ম নেই। তাই ‘পড়ে’ অকর্মক ক্রিয়া।
প্রয়োগ-বৈশিষ্ট্যে সকর্মক ক্রিয়া অকর্মক ক্রিয়া হতে পারে। যেমন :
সকর্মক ক্রিয়া | অকর্মক ক্রিয়া |
---|---|
১. আমি টিফিন খেয়েছি। | ১. আমি টিফিনে খেয়েছি। |
২. মাখন রায় গান গাচ্ছে। | ২. মাখন রায় গানে মজেছে। |
ক্রিয়ার মূল অংশকে ধাতু বলে।
ক্রিয়া পদকে বিশ্লেষণ করলে দুটো অংশ পাওয়া যায় :
১. ধাতু বা ক্রিয়ামূল : কর্, যা, খা, পা, বল্, দেখ্, খেল্, দে ইত্যাদি।
২. ক্রিয়াবিভক্তি : আ, ই, ছি, ছে, বে, তে, লে, লাম ইত্যাদি।
ধাতু তিন প্রকার। যথা : ১. মৌলিক ধাতু ২. সাধিত ধাতু ও ৩. যৌগিক বা সংযোগমূলক ধাতু।
১. মৌলিক ধাতু : যেসব ধাতু বিশ্লেষণ করা যায় না, তাকে মৌলিক ধাতু বলে। যেমন : কর্, চল্, পড়ু, বড়ু, পা, যা, দে, খা, হ্ ইত্যাদি।
২. সাধিত ধাতু : মৌলিক ধাতু বা নাম-শব্দের পরে আ- প্রত্যয়যোগে যে ধাতু গঠিত হয়, তাকে সাধিত ধাতু বলে। যেমন :
কর্ + আ = করা
দেখ্ + আ = দেখা
বল্ + আ = বলা
৩. যৌগিক ধাতু : বিশেষ্য, বিশেষণ বা ধ্বন্যাত্মক অব্যয়ের সাথে কর্, দে, হ, পা, খা ইত্যাদি মৌলিক ধাতু মিলিত হয়ে যে নতুন ধাতু গঠিত হয়, তাকে যৌগিক বা সংযোগমূলক ধাতু বলে। যেমন : ভয় কর্, ভালো হ্, উত্তর দে, মার খা, দুঃখ পা ইত্যাদি।
মৌলিক ধাতু : মৌলিক ধাতুকে ভাঙা বা বিশ্লেষণ করা যায় না। এগুলোকে সিদ্ধ বা স্বয়ংসিদ্ধ ধাতুও বলা হয়ে থাকে।
বাংলা ভাষায় মৌলিক ধাতু তিন প্রকার। যথা :
১. সংস্কৃত ধাতু
২. বাংলা ধাতু
৩. বিদেশাগত ধাতু
১. সংস্কৃত ধাতু : তৎসম ক্রিয়াপদের ধাতুকে সংস্কৃত ধাতু বলে। যেমন :
অক্ + অন = অঙ্কন : ছোটদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিথু প্রথম হয়েছে।
দৃশ্ + য = দৃশ্য : দুর্ঘটনার মর্মান্তিক দৃশ্য বর্ণনা করা যায় না।
কৃ + তব্য = কর্তব্য : ছাত্রদের কর্তব্য লেখাপড়া করা।
হস্ + য = হাস্য : অকারণ হাস্য-পরিহাস ত্যাগ কর।
২. বাংলা ধাতু : যেসব ধাতু সংস্কৃত থেকে প্রাকৃতের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে বাংলায় ব্যবহৃত হয়, তাকে বাংলা ধাতু বা খাঁটি বাংলা ধাতু বলে। যেমন :
আঁক্ + আ = আঁকা : কী সব আঁকাআঁকি করছ ?
দেখ্ + আ দেখা : জাদুঘর আমার কয়েকবার দেখা।
কর্ + অ = কর : তুমি কী কর?
হাস্ + ই = হাসি : তোমার হাসিটি খুব সুন্দর।
৩. বিদেশাগত ধাতু : বিদেশি ভাষা থেকে আগত যেসব ধাতু বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হয়, তাকে বিদেশাগত ধাতু বা বিদেশি ধাতু বলে। যেমন :
খাট্ + বে = খাটবে : যত বেশি খাটবে ততই সুফল পাবে।
বিগড়ু + আনো : তোমার বিগড়ানো ছেলেকে ভালো করার সাধ্য আমার নেই ৷
টান্ + আ : আমাকে নিয়ে টানাটানি করো না, আমি যাব না।
জম্ + আট = জমাট : অন্ধকার বেশ জমাট বেঁধেছে।
সাধিত ধাতু : মৌলিক ধাতু বা নাম শব্দের পরে আ-প্রত্যয়যোগে সাধিত ধাতু গঠিত হয়ে থাকে।
সাধিত ধাতু তিন প্রকার। যথা :
১. প্রযোজক ধাতু
১. প্রযোজক ধাতু
৩. কর্মবাচ্যের ধাতু
১. প্রযোজক ধাতু : মৌলিক ধাতুর পরে (অপরকে নিয়োজিত করা অর্থে) আ-প্রত্যয়যোগে যে ধাতু গঠিত হয়, তাকে প্রযোজক ধাতু বা ণিজন্ত ধাতু বলে। যেমন :
পড়ু + আ = পড়া : শিক্ষক ছাত্রদের পড়াচ্ছেন।
কর্ + আ = করা : সে নিজে করে না, অন্যকে দিয়ে করায়
খেল্ + আ = খেলা : ‘হা - ডু - ডু' আমাদের জাতীয় খেলা৷
২. নাম ধাতু : বিশেষ্য, বিশেষণ ও অনুকার অব্যয়ের পরে আ-প্রত্যয়যোগে গঠিত ধাতুকে নাম ধাতু বলে। যেমন :
ঘুম্ + আ = ঘুমা : বাবা ঘুমাচ্ছেন।
ধমক্ + আ = ধমকা : আমাকে যতই ধমকাও, আমি এ কাজ করব না।
হাত্ + আ = হাতা : অন্যের পকেট হাতানো আমার স্বভাব নয়৷
৩. কর্মবাচ্যের ধাতু : বাক্যে কর্তার চেয়ে কর্মের সাথে যখন ক্রিয়ার সম্পর্ক প্রধান হয়ে ওঠে, তখন সে ক্রিয়াকে কর্মবাচ্যের ক্রিয়া বলে। কর্মবাচ্যের ক্রিয়ার মূলকে কর্মবাচ্যের ধাতু বলে৷
মৌলিক ধাতুর সাথে আ-প্রত্যয়যোগে কর্মবাচ্যের ধাতু গঠিত হয়। যেমন :
কর্ + আ = করা : আমি তোমাকে অঙ্কটি করতে বলেছি।
হার্ + আ = হারা : বইটি হারিয়ে ফেলেছি।
খা + ওয়া = খাওয়া : তোমার খাওয়া হলে আমাকে বলো৷
লক্ষ কর :
১. আজ স্কুল খোলা।
২. গতকাল স্কুল বন্ধ ছিল।
৩. আগামীকাল থেকে পরীক্ষা শুরু।
ওপরের বাক্য তিনটিতে ক্রিয়াপদগুলো নিষ্পন্ন হবার বিভিন্ন সময় বোঝানো হয়েছে। প্রথম বাক্যে ‘খোলা’ ক্রিয়াটি বর্তমান সময়ে নিষ্পন্ন হয়। দ্বিতীয় বাক্যে 'ছিল' ক্রিয়াটি পূর্বে বা অতীতে সম্পন্ন হয়েছে। তৃতীয় বাক্যে ‘হবে’ ক্রিয়াটি দ্বারা কাজটি পরে বা ভবিষ্যতে সম্পন্ন হবে এমন ভাব প্রকাশ পেয়েছে। দেখা যাচ্ছে, মনোভাব প্রকাশের জন্য বাক্যের ক্রিয়াপদ বিভিন্ন সময় বা কালে সম্পন্ন হওয়া নির্দেশ করে থাকে। ক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার এই সময় বা কালকে ক্রিয়ার কাল বলে।
ক্রিয়ার কাল তিন প্রকার। যথা :
১. বর্তমান কাল
২. অতীত কাল
৩. ভবিষ্যৎ কাল
১. বর্তমান কাল : যে ক্রিয়া এখন সম্পন্ন হয় বা হচ্ছে বোঝায়, তাকে বর্তমান কাল বলে। যেমন :
আমি পড়ি৷
সে যায়।
কাকলি দৌড়ায়৷
আইয়ুব গান গায়।
২. অতীত কাল : যে ক্রিয়া আগেই সম্পন্ন হয়েছে, তার কালকে অতীত কাল বলে। যেমন :
আমি তাকে দেখেছিলাম।
গতকাল ঢাকা গিয়েছিলাম।
মা রান্না করছিলেন।
৩. ভবিষ্যৎ কাল : যে ক্রিয়া আগামীতে বা ভবিষ্যতে সম্পন্ন হবে এমন বোঝায়, তার কালকে ভবিষ্যৎ কাল বলে। যেমন :
বৃষ্টি আসবে।
সীমা কাল গান গাইবে।
পার্থ নাচবে।
প্রত্যেকটি কাল আবার কয়েক ভাগে বিভক্ত। যথা :
১. বর্তমান কাল : ক. সাধারণ বর্তমান খ. ঘটমান বর্তমান গ. পুরাঘটিত বর্তমান
২. অতীত কাল : ক. সাধারণ অতীত খ. ঘটমান অতীত গ. পুরাঘটিত অতীত ঘ. নিত্যবৃত্ত অতীত
৩. ভবিষ্যৎ কাল : ক. সাধারণ ভবিষ্যৎ খ. ঘটমান ভবিষ্যৎ গ. পুরাঘটিত ভবিষ্যৎ
ক. সাধারণ বর্তমান : যে ক্রিয়ার কাজটি বর্তমানে সাধারণভাবে ঘটে বা হয়, তাকে সাধারণ বর্তমান বা নিত্যবৃত্ত বর্তমান কাল বলে। যেমন :
সকালে সূর্য ওঠে।
দুই আর দুইয়ে চার হয়।
আমি রোজ বিদ্যালয়ে পড়তে যাই।
খ. ঘটমান বর্তমান : যে ক্রিয়ার কাজ বর্তমানে ঘটছে বা চলছে, এখনো শেষ হয়ে যায় নি, তাকে ঘটমান বর্তমান কাল বলে। যেমন :
আমার ছোট ভাই লিখছে।
ছেলেরা এখনো ফুটবল খেলছে।
টেলিভিশনে রবীন্দ্রনাথের লেখা নাটক দেখাচ্ছে।
গ. পুরাঘটিত বর্তমান : যে ক্রিয়া কিছু আগে শেষ হয়েছে কিন্তু তার ফল এখনো রয়েছে, তাকে পুরাঘটিত বর্তমান কাল বলে। যেমন :
এখন বাবা অফিস থেকে ফিরেছেন।
এবার মা খেতে ডেকেছেন।
অবশেষে আমি ইংরেজি পড়া শেষ করেছি।
ক. সাধারণ অতীত : যে ক্রিয়া অতীত কালে সাধারণভাবে সংঘটিত হয়েছে, তাকে সাধারণ অতীত কাল বলে। যেমন :
তিনি খুলনা থেকে এলেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক খুব ভালো ব্যাট করলেন।
আমি খেলা দেখে এলাম।
খ. ঘটমান অতীত: যে ক্রিয়া অতীত কালে চলেছিল, তখনো শেষ হয় নি বোঝায়, তাকে ঘটমান অতীতকাল বলে। যেমন :
রিতা ঘুমাচ্ছিল।
সুমন বই পড়ছিল।
আমি ছেলেবেলার কথা ভাবছিলাম।
গ. পুরাঘটিত অতীত : যে ক্রিয়া অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে, তার কালকে পুরাঘটিত অতীত কাল বলে। যেমন :
আমরা রাজশাহী গিয়েছিলাম।
তুমি কি তার পরীক্ষা নিয়েছিলে?
আমি তাকে ভাত খেতে দেখেছিলাম।
ঘ. নিত্যবৃত্ত অতীত : যে ক্রিয়া অতীতে প্রায়ই ঘটত এমন বোঝায়, তাকে নিত্যবৃত্ত অতীত কাল বলে। যেমন :
বাবা প্রতিদিন বাজার করতেন।
স্কুল ছুটির পর বন্ধুদের সঙ্গে রোজ পড়া নিয়ে আলাপ করতাম।
ছুটিতে প্রতি বছর গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যেতাম।
ক. সাধারণ ভবিষ্যৎ : যে ক্রিয়া পরে বা আগামীতে সাধারণভাবে সংঘটিত হবে, তার কালকে সাধারণ ভবিষ্যৎ কাল বলে। যেমন :
বাবা আজ আসবেন।
‘আমি হব সকালবেলার পাখি। ’
তুমি হয়তো সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘ছাড়পত্র’ পড়ে থাকবে।
খ. ঘটমান ভবিষ্যৎ : যে ক্রিয়ার কাজ ভবিষ্যতে শুরু হয়ে চলতে থাকবে, তার কালকে ঘটমান ভবিষ্যৎ কাল বলে। যেমন :
সুমন হয়তো তখন দেখতে থাকবে।
মনীষা দৌড়াতে থাকবে।
আমিনা কথা বলতে থাকবে।
গ. পুরাঘটিত ভবিষ্যৎ : যে ক্রিয়া সম্ভবত ঘটে গিয়েছে এবং সেটি বোঝাতে সাধারণ ভবিষ্যৎ কালবোধক শব্দ ব্যবহার করা হয়, এমন হলে তার কালকে পুরাঘটিত ভবিষ্যৎ কাল বলে। যেমন :
তুমি হয়তো আমাকে এ কথা বলে থাকবে।
সম্ভবত আগামীকাল পরীক্ষার ফল বের হয়ে থাকবে।
কাঞ্চন বোধহয় কঠিন অঙ্কটা বুঝে থাকবে।
আদেশ, অনুরোধ, অনুমতি, প্রার্থনা ইত্যাদি বোঝাতে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কালের মধ্যম পুরুষে ক্রিয়াপদের যে রূপ হয়, তাকে অনুজ্ঞা বলে। যেমন :
১. বর্তমান কালের অনুজ্ঞা : তোমরা কাজ করো।
রোহান লিখুক।
মিথ্যা কথা বলো না।
অঙ্কটা বুঝিয়ে দেবেন ?
আমাকে তুমি রক্ষা করো,প্রভু।
আদেশ করুন জাহাপনা
বর্তমান কালের অনুজ্ঞার মধ্যম ও নাম পুরুষের রূপ :
ধরন | সর্বনাম | বিভক্তি | ক্রিয়াপদ |
---|---|---|---|
তুচ্ছার্থক | তুই, তোরা | - ০ শূন্য | কর্, যা, পা, খা, দে |
সাধারণ | তুমি, তোমরা, সে, তারা | - অ, ও, - উক | করো, যাও, খাও, দেও |
সম্ভ্রমাত্মক | আপনি, আপনারা, তাঁরা, তিনি | –উন, −ন, −এন | যাউন, যান, করুন, |
২. ভবিষ্যৎ কালের অনুজ্ঞা : সব সময় সত্যি বলবে।
বড় হও, বুঝতে পারবে।
অসুস্থ হলে ওষুধ খাবে।
ভবিষ্যৎ কালের অনুজ্ঞার মধ্যম ও নাম পুরুষের রূপ
ধরন | সর্বনাম | বিভক্তি | ক্রিয়াপদ |
---|---|---|---|
তুচ্ছার্থক | তুই, তোরা | - স | করিস, যাস, খাস |
সাধারণ | তুমি, তোমরা, সে, তারা | -ও, -বে | করো, করবে, খেও, যাবে |
সম্ভ্রমাত্মক | আপনি, আপনারা, তাঁরা, তিনি | বেন | করবেন, দেখবেন, যাবেন, দেবেন |
১. বাবুদের বাড়ির ছেলেগুলো খুব ভালো। তারা বিস্তর লেখাপড়া করে। সকল লোক তাদের ভালোবাসে। স্কুলে ওরা শিক্ষকমণ্ডলীর নয়নমণি। তারা বন্ধুমহলেও অনেক জনপ্রিয়। গুরুজনেরা ওদের রবীন্দ্রনাথের ‘গল্পগুচ্ছ’ পড়িয়েছেন।
—উপরের অনুচ্ছেদটিতে মোটা দাগের শব্দগুলো বহুবচন প্রকাশক প্রত্যয় ও শব্দ। এগুলো তোমার খাতায় লেখ। তারপর এগুলোর কোনটি প্রাণিবাচক কোনটি অপ্রাণিবাচক বা কোনটি উভয়ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় তা একটি ছকের মাধ্যমে প্রকাশ কর।
২. আমার বাবা একজন শিক্ষক। চাচা সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার। আমার মামা একজন পুলিশ অফিসার। আমার দাদি ও নানি আমাকে খুব ভালোবাসেন। আমাদের একজন গৃহকর্মী আছে, তাকে সবাই বলে আয়া। আমি ওস্তাদের কাছে গান শিখি। আমার ওস্তাদ একজন বড় গায়ক। আমাদের মালী আমাকে ফুল গাছের যত্ন করতে শেখায়। রাজা-বাদশাহ, রাক্ষস-দানব-ভূত-পিশাচের গল্প শোনায়। আমার বন্ধু মালাও এসব গল্প শোনে। তার একটি মেনি বিড়াল আছে, সেটিও শোনে।
—উপরের অনুচ্ছেদ থেকে বিভিন্ন লিঙ্গবাচক শব্দগুলো খুঁজে বের কর এবং সেগুলোর কোনটি কোন শ্রেণির লিঙ্গের অন্তর্গত তালিকাকারে লেখ।
৩. নদী পার হয়ে, ওপাড়ে কুমোরদের একটা গ্রামের ভেতরে সারাদিন দেখছি ওদের মাটির কাজ। হাঁড়ি পাতিল সরা সানকি তৈরি করছে ওরা। বেশি কৌতূহল নিয়ে দেখেছি ফলকের কাজ। মাটির ফলকে ফুলের নকশা, রবীন্দ্রনাথ, বেণীবন্ধনরত যুবতীর চিত্র, জয়নুলের আঁকা গরুর চাকা ঠেলে তোলার প্রতিলিপি, উড়ন্ত পরী, ময়ূরপঙ্খি নৌকোর চিত্র, চোখ বুজে নজরুল যে বাঁশি বাজাচ্ছেন, সেই ফটোগ্রাফের নকল। বাঁশবনে আচ্ছন্ন শীতল একটি গ্রামে, অবিশ্বাস্য ঝিম ধরা নীরবতার ভেতরে, সবুজ শ্যাওলা ধরা কুমোরদের প্রাঙ্গণে সার দিয়ে সাজানো রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জয়নুল।
—উপরের অনুচ্ছেদ থেকে বিশেষ্য (সংজ্ঞাবাচক, শ্রেণিবাচক, সমষ্টিবাচক), ক্রিয়া (সমাপিকা, অসমাপিকা) পদগুলো খুঁজে বের করে একটি ছক তৈরি কর।
৪. সাধারণ বর্তমান কালের বিশিষ্ট প্রয়োগ দেখিয়ে কয়েকটি বাক্য বানাও। যেমন :
ক. চণ্ডীদাস বলেন, ‘সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই।
[অতীত কালের অর্থে, প্রাচীন লেখকের উদ্ধৃতি দিতে]
খ. এখন তবে আসি।
[ভবিষ্যৎ কালের অর্থে, অনুমতি প্রার্থনায়]
Read more
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago